খ্রিষ্টান ম্যারেজ বাংলাদেশ
বাংলাদেশে খ্রিস্টান জনসংখ্যা তুলনামূলক খুব কম, সুতারাং খ্রিস্টান বিবাহের পরিমাণও কম। বাংলাদেশে খ্রিস্টান বিয়ের আইন আছে এবং যথাযথ বিবাহের রেজিষ্টার আছে। কিন্তু অনেক খ্রিস্টান যুবক-যুবতীরা খ্রিস্টান রেজিষ্টার সম্পর্কে জানে না, তাই তারা স্পেশাল ম্যারেজ এক্ট ১৮৭২ আইন অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। আবার কিছু সময় দেখা যায় খ্রিষ্টান কোর্ট ম্যারেজ করে, ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন করে না।
এবার প্রশ্ন আসতে পারে, স্পেশাল ম্যারেজ বা কোর্ট ম্যারেজ করলে সমস্যা কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানতে স্পেশাল ম্যারেজ এবং কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে জানতে হবে।
স্পেশাল ম্যারেজ এক্ট ১৮৭২
স্পেশাল ম্যারেজ হল বিশেষ বিবাহ আইন, যেখানে দুই ধর্মের যুবক-যুবতীদের মাঝে বিবাহ করানো হয়, এছাড়া যারা কোন ধর্মে বিশ্বাসী না তারাও এই আইনের অধীনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে পারে। তাহলে এবার বুঝেন আপনারা দুই জন একই ধর্মের হয়েও কেন ধর্ম বিশ্বাস করেন না বলে বিবাহ করবেন। সুতারাং যেহেতু বাংলাদেশে খ্রিস্টান বিয়ের আইন আছে এবং যথাযথ বিবাহের রেজিষ্টার আছে সেহেতু আপনারা খ্রিস্টান ম্যারেজ এক্ট ১৮৭২ অনুযায়ী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবেন।
খ্রিষ্টান কোর্ট ম্যারেজ
কোর্ট ম্যারেজ এমন একটা টার্ম যা না আছে আইনে না আছে ধর্মে। কোর্ট ম্যারেজ কথাটা, কোথা থেকে এসেছে তা নির্দিষ্ট করে বলা প্রায় অসম্ভব। কারণ আইনের দৃষ্টিতে কোর্ট ম্যারেজ বলতে কিছু নেই। ধর্মীয় দৃষ্টিতেও কোর্ট ম্যারেজের কোন বিধান নেই । হলফনামাকে কোর্ট ম্যারেজ বলা হয়। ছেলে মেয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয় এবং বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন সহ এই হলফনামা করে, তাহলে বিয়ে আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য হয়। এমন কি ছেলে মেয়ের বাবা-মা মিথ্যা মামলা করলে এই হলফনামা অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসাবে কাজ করবে। কারন এই হলফনামার স্ট্যাম্পে ছেলে মেয়ে উভয় স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে বিয়ে করতেছে এই মর্মে স্বাক্ষর থাকে, এছাড়াও নোটারী পাবলিক এবং আইনজীবীর স্বাক্ষর থাকে।
খ্রিষ্টান ম্যারেজ এক্ট ১৮৭২
খ্রিস্টান ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৮৭২, (খ্রিস্টান বিবাহ আইন) অনুযায়ী, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বিয়ে সম্পাদিত হয়। কিন্তু বিয়ে রেজিস্ট্রি করার আগে কিছু নিয়ম পালন করতে হয়, যা অন্যান্য ধর্ম অবলম্বীদের থেকে ভিন্ন।
নোটিশ প্রদান
চার্চের বরাবর নোটিশ দিতে হবে। উক্ত নোটিশে, পাত্র ও পাত্রীর নাম (পুরো নাম লিখতে হবে) ডাক নাম সহ, পাত্র ও পাত্রীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা লিখতে হবে।
আপত্তি বিবেচ্য
চার্চ, নোটিশটি কোথাও ঝুলিয়ে রাখবে। কোন প্রকার আপত্তি না থাকলে বিবাহের হলফনামা চাইবে যে হলফনামায় বিয়ের ঘোষণা থাকবে। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ছেলে মেয়ের বিবাহের সকল যোগ্যতা থাকলে চার্চ একটা ছাড়পত্র দেবে।
খ্রিষ্টান ম্যারেজ রেজিষ্ট্রিশনঃ
চার্চের ছাড়পত্র দেখিয়ে একজন খ্রিষ্টান ম্যারেজ রেজিস্টারের মাধ্যমে বিবাহ রেজিষ্ট্রিশন করতে হবে।
আমরা সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া করে থাকি। এছাড়া মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্মের বিবাহ করানো হয়। যোগাযোগঃ +৮৮০১৫১৫৬১৫৭৮৬
খ্রিষ্টান ম্যারেজ রেজিষ্ট্রিশন করতে কি কি লাগে?
- ছেলে মেয়ে উভয়ের বয়স প্রমাণের জন্য যে কোন একটা গ্রহণযোগ্য ডকুমেন্ট লাগবে। যেমনঃ এন আই ডি, জন্মনিবন্ধন, পাসপোর্ট অথবা যে কোন বোর্ড পরিক্ষার সার্টিফিকেট। (যে কোন একটা হলেই হবে)।
- ছেলে মেয়ে উভয়ের পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি করে ছবি।
- প্রাপ্ত বয়স্ক তিন জন খ্রিষ্টান স্বাক্ষী।
রেজিষ্ট্রিশন শেষে রেজিষ্টার নিকোট থেকে ম্যারেজ সার্টিফিকেট নিতে হবে।
খ্রিষ্টান ম্যারেজ সার্টিফিকেট
যদিও ম্যারেজ রেজিষ্ট্রি করা বাধ্যাতামূলক অনেক সময় এতো ঝামেলার কারোণে খ্রিষ্টান যুবক-যুবতীরা ম্যারেজ রেজিষ্ট্রি করে না।
ম্যারেজ রেজিষ্ট্রি না করলে কি হয়
- রেজিস্ট্রিশন করে বিবাহ না করলে কোন পক্ষ সত্যতা অস্বীকার করতে পারে।
- স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া স্বামী পুনরায় বিবাহ করতে পারে, স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না।
- স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যু ঘটলে দুইজনের মধ্যে যিনি বেঁচে থাকবেন, তিনি মৃতের সম্পত্তি থেকে বৈধ অংশ আদায় করতে পারবেন না।
- তাছাড়াও বাড়ি ভারা, হোটেল ভাড়া, ভ্রমন সহ বিভিন্ন জায়গায় বিবাহের দলিল/প্রমান পত্র হিসাবে ম্যারেজ সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। অনেক সময় ম্যারেজ সার্টিফিকেট না থাকায় বিভিন্ন সমস্যায় পরতে হয়।
তাই বিবাহ রেজিষ্ট্রি করা এবং ম্যারেজ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা উচিত ।