বাংলাদেশে ম্যারেজ সার্টিফিকেট পাওয়ার সহজ উপায়

ম্যারেজ সার্টিফিকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনী দলিল, যা আপনার বিবাহকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। দেশি বা বিদেশি নাগরিক যেই হোন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী একজন বাংলাদেশিকে বিয়ে করে সহজেই ম্যারেজ সার্টিফিকেট পেতে পারেন। এই লেখাটিতে আবেদনের প্রক্রিয়া, সার্টিফিকেটের গুরুত্ব, রেজিষ্ট্রেশনসহ বাংলাদেশ ম্যারেজ সার্টিফিকেট পাওয়ার বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। লেখাটি ইংরেজিতে পড়তে পারেন marriage certificate.

ম্যরেজ সার্টিফিকেট কেন গুরুত্বপুর্ণ

ম্যারেজ সার্টিফিকেট বিবাহের প্রধান এবং একমাত্র আইনি দলিল, যা বৈবাহিক অবস্থা প্রমান করে।
পাসপোর্টঃ পাসপোর্ট করার জন্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট বৈবাহিক সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা নাম পরিবর্তন বা বৈবাহিক অবস্থার স্বীকৃতি প্রদান করে।
বিদেশি নাগরিক বিয়েঃ বিদেশি নাগরিক বিয়ের ক্ষেত্রে ম্যারেজ সার্টিফিকেট বৈধভাবে বৈবাহিক সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা ভিসা, রেসিডেন্সি আবেদন এবং অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য। এটি বৈবাহিক অধিকার সংরক্ষণ ও বিভিন্ন দেশে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কের স্বীকৃতি পেতে সাহায্য করে।
স্পাউস ভিসাঃ ভিসা পাওয়ার জন্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট বৈবাহিক সম্পর্কের বৈধ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা স্পাউস ভিসা এবং ফ্যামিলি ট্রাভেলসহ  বিভিন্ন ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় অপরিহার্য। ।
এম্বাসিতে জমাদানঃ এম্বাসি ফেস করার জন্য ম্যারেজ সার্টিফিকেট বৈবাহিক সম্পর্কের বৈধ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে, যা ভিসা, রেসিডেন্সি এবং অন্যান্য কনস্যুলার সেবায় অপরিহার্য।
এছাড়া, বিবাহের সত্যতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এটি আইনগত সুবিধা, স্বামী স্ত্রীর সম্পত্তির অধিকার, এবং অন্যান্য আইনি সুরক্ষা প্রদান করে।

ম্যারেজ রেজিষ্ট্রিশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র  

  • বর এবং কনে উভয়ের  পাসপোর্ট বা জাতীয় পরিচয়পত্রের  ফটোকপি।
  • দুজনের চার কপি করে পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • যদি বিদেশী নাগরিক হয়, তবে  পাসপোর্টর ইমিগ্রেশন সিলের ফটোকপি।
  • বিদেশী নাগরিকের জন্য ভিসার একটি ফটোকপি।
  • বরের বয়স কমপক্ষে 21 এবং কনের কমপক্ষে 18 হতে হবে।
  • উভয়কেই অবিবাহিত হতে হবে, তালাকপ্রাপ্ত বা বিধবা হলে যথাযথ নথিপত্র প্রদান করতে হবে।
  • উভয় পক্ষকেই স্বেচ্ছায় বিয়েতে রাজি হতে হবে।

কোথায় এবং কিভাবে ম্যারেজ সার্টিফিকেট পাবেন

ম্যারেজ রেজিরেষ্ট্রারের নিকট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ম্যারেজ রেজিস্ট্রার বিবাহ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে এবং তার ভিত্তিতে ম্যারেজ সার্টিফিকেট প্রদান করেন। ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ধর্মভিত্তিক আলাদা হয়, তাই আপনার ধর্ম অনুযায়ী সঠিক রেজিস্ট্রার খুঁজে নিতে হবে। ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন ফি ধর্ম এবং রেজিস্ট্রার ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। সুতরাং আপনার কেস আমাদের সাথে শেয়ার করলে আমরা আপনাকে বলে দিতে পারব, আপনি কোন রেজিস্ট্রার থেকে সার্টিফিকেট নেবেন এবং ফি কত হবে।
মনে রাখবেন বাংলাদেশে অনলাইন আবেদন গ্রহনযোগ্য নয়, তবে অনলাইনে নাম ঠিকানা প্রদান করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া যায়। সব ক্ষেত্রে আবেদন করা বাধ্যতামূলক নয়।

বাংলাদেশে চার ধরনের ম্যারেজ রেজিষ্ট্রার হয়

  • মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার (১৯৬১) ছেলে এবং মেয়ে উভয় মুসলিম হলে, মুসলিম পারিবারিক আইন 1961 অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করে সার্টিফিকেট নিতে পারবে।
  • হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রার (২০১২) ছেলে এবং মেয়ে উভয় হিন্দু হলে, হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন 2012 অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করে সার্টিফিকেট নিতে পারবে।
  • খ্রিস্টান ম্যারেজ রেজিস্ট্রার (১৮৭২) ছেলে এবং মেয়ে উভয় খ্রিস্টান হলে, খ্রিস্টান ম্যারেজ আইন 1872 অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করে সার্টিফিকেট নিতে পারবে।
  • স্পেশাল ম্যারেজ রেজিস্ট্রার (১৮৭২) ছেলে এবং মেয়ে দুই জন দুই  ধর্মের হলে, বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করে সার্টিফিকেট নিতে পারবে। বিশেষ বিবাহ আইন ১৮৭২ অনুযায়ী বিয়ে নিবন্ধন করতে নিবন্ধকের নিকট ১৪ দিন আগে নোটিশ দিতে হবে। ভারতে স্পেশাল ম্যারেজ সার্টিফিকেট  ছাড়া অন্য কোন রেজিষ্ট্রিশন গ্রহন করে না।

বিবাহের সার্টিফিকেট রেজিস্ট্রার থেকে সংগ্রহ করে বিদেশে ভিসা, এম্বাসিতে জমা বা অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে চাইলে তা নোটারি পাবলিক, আইন মন্ত্রণালয়, এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা সত্যায়িত করতে হবে।

পরামর্শ

  • কাজ শুরু করার আগে পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে কাজ শুরু করুন।
  • বিদেশি নাগরিকদের বিবাহ নিয়ে অভিজ্ঞ একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিন।
  • মনে রাখবেন, ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন, সার্টিফিকেট, নোটারি ও মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন সঠিকভাবে না হলে, এম্বাসি সার্টিফিকেট গ্রহণ করবে না এবং পুরো প্রক্রিয়া পুনরায় করতে হবে।

কি ভাবে আমরা সাহায্য করতে পারব

দশ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আমাদের টিম, বিভিন্ন দেশের ও ধর্মের ম্যারেজ এবং ডিভোর্স সেবায় দক্ষতার সাথে সফলতা অর্জন করেছে। গুগল ম্যাপের ইতিবাচক রিভিউ এবং ওয়েবসাইটের কাজের ছবি আমাদের পেশাদারিত্বের দৃঢ় প্রমাণ। আবেদন থেকে এম্বাসিতে জমা দেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ আমরা দ্রুত এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করি। বিস্তারিত জানতে কল বা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করুন: ৮৮০১৫১৫৬১৫৭৮৬, ম্যাসেঞ্জার

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *