স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক এবং স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদান

তালাক কিভাবে দিতে হয়, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্বামী কর্তৃক স্ত্রিকে তালাকের নোটিশ প্রক্রিয়া

তালাকের নোটিশ প্রদান সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এডভোকেট মোঃ আলী হাসান, ডিভোর্স লয়ার ঢাকা

তালাক কি? 

স্বামী এবং স্ত্রীর মধ্যে বিবাহের সম্পর্ককে ভেঙ্গে দেওয়াকে তালাক বলে। স্বামি স্ত্রী বিবাহের মাধ্যমে একে অপরের সাথে আবদ্ধ হয়, যার ফলে তাদের মধ্যে এক প্রকার দায় দায়িত্বের সৃষ্টি হয়, আর তালাকের মাধ্যমে এই দায়িত্ব কত্যব্যের অবসান ঘটে। 

তালাক কত প্রকার? 

  • স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক প্রদান
  • স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদান
  • পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তালাক  প্রদানে  (খোলা তালাক )
  • আদালতের মাধ্যমে তালাক প্রদান।

এই চারটি পদ্ধতিতে বাংলাদেশে তালাক হয়ে থাকে।

স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক বা স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাক প্রদানের প্রক্রিয়া।

  • তালাক রেজিস্ট্রি
  • তালাকের নোটিশ প্রদান।
  • সালিস এর উদ্যোগ গ্রহণ। 
  • ৯০ দিন অতিবাহিত হবার পর তালাক রেজিস্ট্রার থেকে তালাকের সার্টিফিকেট গ্রহণ। 

স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ প্রদান।

প্রথমে কোন ডিভোর্স রেজিস্ট্রারের নিকট থেকে ডিভোর্স রেজিস্ট্রি করে নোটিশ তৈরি করতে হবে। 

রেজিস্ট্রি বইয়ে স্বাক্ষর করতে হবে এবং টিপ সই দিতে হবে। উক্ত রেজিস্ট্রি বইয়ে দুই জন সাক্ষীর স্বাক্ষর থাকবে। এর পর রেজিস্ট্রার তালাকের নোটিশ তৈরী করবেন। 

যাকে ডিভোর্স দেওয়া হচ্ছে তার ঠিকানায় ডিভোর্স নোটিশ পাঠাতে হবে। উক্ত নোটিশের একটি কপি তার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা পৌরসভার সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবর পাঠাতে হবে। নোটিশ সরকারি ডাকে রেজিস্ট্রি করে পাঠাতে হবে এবং উক্ত রেজিস্ট্রির স্লিপ দেখিয়ে ডিভোর্স রেজিস্ট্রারের নিকট থেকে ডিভোর্স সার্টিফিকেট নিতে হবে। 

উল্লেখ্য যে স্ত্রী শুধুমাত্র কাবিন নামার ১৮ নং কলামে স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা দেওয়া থাকলে স্ত্রী তালাক দিতে পারবে। অন্যথায় স্ত্রী স্বামিকে তালাক দিতে পারবে না। কারন স্ত্রীরির তালাক দেওয়ার ক্ষমতা সিমিত, যা কেবল কাবিন নামার ১৮ নং কলামে উল্লেখিত। 

সম্পর্ণ কার্যক্রম একজন এডভোকেটের অধীনে হওয়া ভাল, তবে বাধ্যতামূলক নয়। যদি নোটিশের পাশাপাশি এফিডেভিট এর মাধ্যমে ডিভোর্সের ঘষনা দেওয়া হয় তাহলে অবশ্যই একজন লইয়ার দ্বারা সনাক্ত করতে হবে। এছাড়া বিভিন্ন ঝামেলা এড়াতে এক জন এডভোকেটের অধীনে তালাক হওয়া নিরাপদ।

উল্লেখ্য যে এক্ষেত্রে  চেয়ারম্যানের/ সিটি কর্পোরেশন মেয়র কাছে  যে তারিখে নোটিশ পৌঁছেছে সেই তারিখ হতে নব্বই দিন পর তা কার্যকর হবে। 

যদি এই নব্বই দিনের মধ্যে সালিশী পরিষদ গঠন করে  সমঝোতা করা হয় তাহলে তালাকের কার্যক্রম হবে না। 

চেয়ারম্যানের/ সিটি কর্পোরেশন মেয়র সালিশী পরিষদ গঠন করা সত্ত্বেও ছেলে বা মেয়ে যে কোন পক্ষ  সমঝোতায় না আসতে পেরে। সেক্ষেত্রে নব্বই দিনের মধ্যে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। 

তবে নোটিশ পাওয়ার  নব্বই দিনের মধ্যে কোনো উদ্যোগ না নিলে এমনকি নব্বই দিন পর  সম্পর্ক ফেরনোর চেষ্টা করলেও তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। 

গর্ভবতী থাকা অবস্থায় তালাকের বিধান

বিশেষ আইনে বলা আছে , স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে তাহলে গর্ভকালীন সময় শেষ হওয়ার পর উক্ত তালাক কার্যকর হবে।

যে পক্ষই তালাক প্রদান করুক না কেন, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে পৌঁছানোর সময় থেকে নব্বই দিন বা গর্ভকালীন সময় অতিবাহিত হবার পরের নব্বই দিনে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে। 

খোলা তালাক বা বিউচুয়াল ডিভোর্স।

স্বামী স্ত্রী উভয় মিলে তালাক দিলে, খোলা তালাক বা মিউচুয়াল ডিভোর্স বলে।

স্বামি স্ত্রী উভয় যখন কোন তালাক  রেজিস্ট্রারের নিকট গিয়ে, তালাক রেজিস্ট্রি বইয়ে স্বাক্ষর করে তালাক দেয় তখন তাকে খোলা তালাক বলে। খোলা তালাক বা মিউচুয়াল ডিভোর্সের ক্ষেত্রে কোন পক্ষকে নোটিশ পাঠাতে হয় না। মিউচুয়াল ডিভোর্স কার্যকর হতে নব্বই দিনের প্রয়োজন হয় না, উক্ত ডিভোর্স সাথে সাথে কার্যকর হয়ে যায়। এই তালাক-কে অপ্রত্যাহার যোগ্য তালাকও বলে হয়ে থাকে। অনেকে খোলা তালাক দেবার পর দাম্পত্য জীবনে ফিরে যেতে চান, কিন্তু ইসলামি আইনে সেই সুযোগ থাকে না। 

আদালতের মাধ্যমে তালাক প্রদান।

অনেক সময় বিভিন্ন কারনে আদালত কর্তৃক তালাক হয়ে থাকে, যা খুবই নগণ্য। 

তালাক বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভিডিওটা দেখতে পারেন (YouTube Video)

https://www.youtube.com/watch?v=2cNl00GB1Z8&t=100s

তালাকের পর  সন্তানের কি ব্যবস্থা 

বিবাহবিচ্ছেদের পর ছেলে সন্তান ৭ বছর পর্যন্ত ও মেয়ে সন্তান বয়ঃসন্ধিকাল পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে।

মুসলিম আইনে পিতা সন্তানের আইনগত অভিভাবক। মা শুধুমাত্র রক্ষক বা তত্ত্বাবধায়ক। বাবা ভরণপোষণ দেবে। যদি বাবা দায়িত্ব পালন না করে, সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান সালিশী পরিষদের মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে  হবে।

যদি কোন ভাবেই সন্তানের বাবা দায়িত্ব পালন না করতে চায়, তাহলে একজন এডভোকেটের সহযোগিতায় আদালতে অভিযোগ করা যাবে।

যোগাযোগঃ messenger

Phone: 01924-11 91 84, বা 01515-615786

Email: admin@marriagedivorcelawyerdhakabd.com বা focuse.unique60@gmail.com

2 thoughts on “তালাক কিভাবে দিতে হয়, স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্বামী কর্তৃক স্ত্রিকে তালাকের নোটিশ প্রক্রিয়া”

  1. Pingback: স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ প্রদান প্রক্রিয়া

  2. Pingback: স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাকনোটিশ প্রদান প্রক্রিয়া

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *