কোর্ট ম্যারেজের আইনগত সহায়তা, প্রক্রিয়া, সুবিধা ও বৈধতা

কোর্ট ম্যারেজ হলো একটি বিবাহ প্রক্রিয়া, যেখানে ছেলে ও মেয়ে স্বেচ্ছায় এবং আইনি বিধি অনুযায়ী বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এটি একটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তিবদ্ধ প্রক্রিয়া, যেখানে ছেলেমেয়ে, নোটারি পাবলিক এবং একজন আইনজীবীর স্বাক্ষর থাকে। এটি পূর্ণাঙ্গ বিবাহ নয়, বরং একটি চুক্তিপত্র। এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন, কোর্ট ম্যারেজ কীভাবে করলে আইনগত ও ধর্মীয়ভাবে বৈধ হয় এবং মামলা-ঝামেলায় অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসাবে কাজ করে।

কোর্ট ম্যারেজ কীভাবে আইনত বৈধ হয়?

বাংলাদেশের আইনে বৈধ বিবাহের জন্য বয়সের সীমা এবং রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। মুসলিমদের জন্য ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ নিবন্ধন আইন, হিন্দুদের জন্য ২০১২ সালের হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন এবং খ্রিস্টানদের জন্য ১৮৭২ সালের খ্রিস্টান বিবাহ আইন রয়েছে। এছাড়া স্পেশাল ম্যারেজ রেজিষ্ট্রিশন ১৮৭২ অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধন করা যায়। আইন অনুযায়ী, রেজিস্ট্রেশন করলে তা বৈধ বিবাহ হিসেবে গণ্য হবে।

  

কোর্ট ম্যারেজ কি ইসলামে বৈধ?

কোর্ট ম্যারেজ ইসলামে বৈধ হতে হলে তিনটি শর্ত পূর্ণ হওয়া প্রয়োজন:

  • দুই জন সাক্ষী: ইসলামিক নিয়মে বিয়ের জন্য ২ জন পুরুষ সাক্ষী লাগবে (নারী সাক্ষী হলে ৪ জন)।
  • ইজাব-কবুল: এক পক্ষ বিয়ের প্রস্তাব দিবে এবং অন্য পক্ষ তা গ্রহণ করবে।
  • দেনমোহর: বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট দেনমোহর নির্ধারণ করতে হবে।

হিন্দু ও অন্য  ধর্মে কোর্ট ম্যারেজের বৈধ নিয়ম 

হিন্দুদের জন্য কোর্ট ম্যারেজের পাশাপাশি, মন্দিরে পুরোহিত দ্বারা বিয়ে এবং  রেজিস্ট্রেশন করে বিবাহ করতে হয়। অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য বাংলাদেশের আইন এবং ধর্মীয়  নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  বিবাহ সম্পন্ন করা হয়।

আইনগত ও ধর্মীয়ভাবে সর্বদা গ্রহণযোগ্য বিবাহের উপায়

আমরা বাংলাদেশের আইন এবং ধর্মীয় আইনের ভিত্তিতে তিনটি ধাপে এই কাজ সম্পন্ন করি:

  • কোর্ট ম্যারেজ – আইনি দিক থেকে বিবাহের প্রথম ধাপ।
  • ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন – বিবাহের সরকারি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্তি।
  • ধর্মীয়ভাবে বিয়ে – ইসলামিক নিয়মে ইজাব-কবুল, দেনমোহর এবং সাক্ষীর মাধ্যমে,অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নির্দিষ্ট ধর্মীয় নিয়মে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়

এই তিনটি ধাপে বিবাহটি আইনগত ও ধর্মীয়ভাবে বৈধ এবং সর্বদা গ্রহণযোগ্য হয়। বাংলাদেশের আইন ও ধর্মীয় নিয়ম মেনে দ্রুত সময়ে বিবাহ সম্পন্ন করতে আমরা পাশে আছি। সব সেবা এক জায়গায়, একই টেবিলে পাবেন। যোগাযোগ : হোয়াটসঅ্যাপ বা কলঃ 01515-615786

কোর্ট ম্যারেজের সুবিধা:

আইনিভাবে গ্রহণযোগ্যতা: যখন বিয়েটি রেজিস্ট্রেশন হয় এবং অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসেবে কোর্ট ম্যারেজ করা হয়, তখন এটি আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য হয়।
আইনি সুরক্ষা: ছেলে-মেয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্ক হয় এবং সঠিকভাবে চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হয়, তবে এটি আইনের দৃষ্টিতে বৈধ ও নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।
ফ্যামিলি কনফ্লিক্ট থেকে সুরক্ষা: ছেলে-মেয়ের বাবা-মা যদি মিথ্যা মামলা করেন, তখন এই চুক্তিপত্র অতিরিক্ত সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে, কারণ এতে ছেলে-মেয়ে স্বেচ্ছায় এবং স্বজ্ঞানে বিবাহ করার কথা স্বাক্ষরিত থাকে।
আইনজীবী নোটারি পাবলিকের স্বাক্ষর: চুক্তিপত্রে নোটারি পাবলিক এবং আইনজীবীর স্বাক্ষর থাকার কারণে এটি আরও আইনি শক্তি পায় এবং পিতামাতার বিরোধ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

কোর্ট ম্যারেজের অসুবিধা

পারিবারিক সমর্থন না পাওয়া: কোর্ট ম্যারেজের পর অনেক সময় পরিবার মেনে নেয় না, যা সম্পর্কের মধ্যে চাপ তৈরি করে।
ডিভোর্সের ঝুঁকি: পরিবারের অমতে বিয়ে করলে, দ্রুত ডিভোর্সের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
মাবাবার দোয়া ছাড়া সমস্যা: মা-বাবার অজান্তে বিয়ে করলে তাদের সমর্থন না পাওয়া এবং পরে সম্পর্কের টেকসই না হওয়া সম্ভব।
ভবিষ্যতে টানাপোড়েন: কিছু সময় পরে, দম্পতির মধ্যে সম্পর্কের সমস্যা এবং পরিবারের সমর্থন না পাওয়ার কারণে সমস্যা দেখা দেয়।

কোর্ট ম্যারেজের জন্য কি কি লাগে?

  • বয়স প্রমাণের জন্য: এনআইডি, জন্মনিবন্ধন সনদ অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি।
  • ছবি: তিন কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, যা ফেস সনাক্তকরণ এবং বায়োমেট্রিক হিসেবে ব্যবহার হবে।
  • সাক্ষী: দুইজন পুরুষ সাক্ষী (হিন্দুদের জন্য ৪ জন হিন্দু সাক্ষী লাগবে)।
  • স্পেশাল ম্যারেজ রেজিষ্ট্রিশনের ১৪ দিন আগে নোটিশ করতে হয়।

মুসলিম কোর্ট ম্যারেজের রেজিস্ট্রেশন খরচ

২০০৯ এর ২১ বিধি অনুযায়ী, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি প্রথম ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১৪০০ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি লক্ষ টাকায় ১০০ টাকা বাড়বে।

  • এক লক্ষ টাকা দেনমহোরে রেজিস্ট্রেশন ফি: ১৪০০ টাকা
  • দুই লক্ষ টাকায়: ২৮০০ টাকা
  • তিন লক্ষ টাকায়: ৪২০০ টাকা
  • চার লক্ষ টাকায়: ৫৬০০ টাকা
  • পাঁচ লক্ষ টাকায়: ৭০০০ টাকা
  • পরবর্তী প্রতি লক্ষ টাকার জন্য: ১০০ টাকা করে বাড়বে।

বিবাহের পূর্ণাঙ্গ সেবা

  • মুসলিমদের জন্য কোর্ট ম্যারেজ, রেজিস্ট্রেশন ও ইসলামিক বিবাহ।
  • হিন্দুদের জন্য কোর্ট ম্যারেজ, মন্দিরে বিয়ে ও রেজিস্ট্রেশন।
  • অন্য ধর্মাবলম্বীদের নির্দিষ্ট নিয়মে বিবাহ সম্পন্ন করা হয়।
  • আমাদের থেকে এক টেবিলে সকল সেবা পাবেন, অন্য কোথাও যেতে হবে না।

অধিক তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন: কল অথবা হোয়াটসঅ্যাপ: +880 1515 615 786
মেসেঞ্জার: আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মেসেজ পাঠান।
আমাদের সেবার মাধ্যমে আপনি পাবেন সম্পূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য এবং দ্রুত কাজের নিশ্চয়তা।

কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কিত সাধারণ প্রশ্নোত্তর (FAQ)

১. কোর্ট ম্যারেজ কি ইসলামে বৈধ?

কোর্ট ম্যারেজ নিজেই একটি ইসলামিক বিবাহ নয়। তবে, ইসলামিক শরিয়ত অনুসারে যদি বিবাহের সকল শর্ত পূরণ হয় (যেমন: সাক্ষী, দেনমহর, কাবিননামা), তাহলে এটি বৈধ বিবাহ হিসেবে গণ্য হবে।

২. কোর্ট ম্যারেজ কি সরকার স্বীকৃত?

কোর্ট ম্যারেজ নিজেই সরকার স্বীকৃত বিবাহ নয়, তবে এটি অতিরিক্ত আইনি সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে। সরকার স্বীকৃত বিবাহের জন্য আইন অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধন করতে হবে।

৩. কোর্ট ম্যারেজের জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে?

  • এনআইডি,  জন্মনিবন্ধন সনদ অথবা পাসপোর্ট এর ফটোকপি
  • ৩ কপি করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি
  • দুইজন পুরুষ সাক্ষী (হিন্দুদের জন্য ৪ জন হিন্দু সাক্ষী)

৪. কোর্ট ম্যারেজের পর কি বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা যায়?

হ্যাঁ, কোর্ট ম্যারেজের পর নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব, যা বিবাহকে সরকার স্বীকৃতি প্রদান করে।

৫. কোর্ট ম্যারেজ করলে কি পিতা-মাতার অনুমতি লাগে?

প্রাপ্তবয়স্ক (ছেলে ২১ বছর ও মেয়ে ১৮ বছর) হলে পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়া কোর্ট ম্যারেজ করা সম্ভব। তবে, পারিবারিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তাদের মতামত নেওয়া উত্তম।

কোর্ট ম্যারেজ করতে কত সময় লাগে?

সাধারণত, সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে, তবে কিছু পরিস্থিতিতে এটি পরিবর্তিত হতে পারে। আমরা ১ ঘণ্টার মধ্যে কোর্ট ম্যারেজ, ম্যারেজ রেজিস্ট্রেশন এবং ধর্মীয়ভাবে বিবাহ সম্পন্ন করে দেই।

৭. কোর্ট ম্যারেজের খরচ কত?

খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর, যেমন নোটারি ফি, আইনজীবীর ফি এবং বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ফি।

  • এক লক্ষ টাকা দেনমহোরে রেজিস্ট্রেশন ফি: ১৪০০ টাকা
  • দুই লক্ষ টাকায়: ২৮০০ টাকা
  • তিন লক্ষ টাকায়: ৪২০০ টাকা
  • চার লক্ষ টাকায়: ৫৬০০ টাকা
  • পাঁচ লক্ষ টাকায়: ৭০০০ টাকা
  • পরবর্তী প্রতি লক্ষ টাকার জন্য: ১০০ টাকা করে বাড়বে।

৮. কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে কি বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে বিয়ে করতে পারেন?

হ্যাঁ, তবে বিদেশি নাগরিকের পাসপোর্ট, ভিসা এবং প্রয়োজনীয় আইনি কাগজপত্র থাকতে হবে। এছাড়া, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন আইনের নিয়ম মানতে হবে।

৯. কোর্ট ম্যারেজ করলে কি ভবিষ্যতে কোনো আইনি সমস্যা হতে পারে?

যদি কোর্ট ম্যারেজের পাশাপাশি আইনানুগ বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে, বিশেষত উত্তরাধিকার বা বিবাহ সংক্রান্ত মামলা হলে। বিবাহ রেজিষ্ট্রিশন করে নিলে আর কোন সমস্যা থাকে না।

১০. কোর্ট ম্যারেজ সংক্রান্ত আইনি সহায়তার জন্য কোথায় যোগাযোগ করব?

আমাদের আইনজীবীদের মাধ্যমে দ্রুত ও নিরাপদ কোর্ট ম্যারেজ এবং বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে যোগাযোগ করুন:
কল/হোয়াটসঅ্যাপ: +880 1515 615 786
মেসেঞ্জার: আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মেসেজ পাঠান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *