ধর্ম পরিবর্তন আইন এবং ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে করার নিয়ম বাংলাদেশ

অনেক সময় দেখা যায় দুই ধর্মের ছেলে মেয়েরা সম্পর্কে জড়ায় যায়। একে অপরকে ছাড়া চলা অসম্ভাব হয়ে পরে। কিন্তু তাদের এই সম্পর্ক সমাজ মানতে চায় না। তখন তাদের মধ্যে একজনধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ে র সিদ্ধান্ত নেয়। ইংরেজীতে পড়ুন

ধর্ম পরিবর্তন আইন বাংলাদেশ

যেহেতু ধর্ম পরিবর্তন বিষয় এসছে সেহেতু জানা দরকার ধর্ম পরিবর্তন বা ধর্ম পালন সম্পর্কে আইন কি বলে?

সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে
প্রত্যেক নাগরিকের যে কোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে
সুতরাং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষ যে কোন ধর্ম গ্রহণ ও পালন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, এটা তাহার আইনি অধিকার।

ধর্ম পরিবর্তন করার নিয়ম

বিবাহ বা যে কোন উদ্দেশ্যে ধর্ম পরিবর্তন হোক না কেন, ধর্ম পরিবর্তন করার নিয়ম একই। যিনি ধর্ম পরিবর্তন করতে চান, তিনি কোর্টে যাবেন এবং একজন আইনজীবীর মাধ্যমে দুইটি হলফনামা করবেন

ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা
নাম পরিবর্তনের হলফনামা

আর যদি ধর্ম পরিবর্তন করে বিবাহ করতে চান, তাহলে আরও একটা হলফনামা করতে হবে।

বিবাহের হলফনামা (কোর্ট ম্যারেজ)

ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা

কোন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষ ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য, আইনজীবীর মাধ্যমে শনাক্ত করে এবং নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সত্যায়ন করে, হলফনামায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে পারেন। যেখানে তিনি ঘোষণা দেবেন যে, আজ হইতে তিনি তার আগের ধর্ম পরিবর্তন করলেন এবং নতুন ধর্ম গ্রহন করলেন। নতুন গ্রহণ করা ধর্ম অনুসারে জীবনযাপন করবেন।

বরাবর নোটারী পাবলিক এর কার্য্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ।
“হলফনামা”

ধর্ম পরিবর্তনের  হলফনামা

আমি —————, পিতা- ————— , মাতা- ————— , ঠিকানাবাসা/হোল্ডিং: ——, গ্রাম/রাস্তা: ———-, —–, ডাকঘর: ————— , ————— , ————— , ————–, জাতীয় পরিচয় পত্র নং ————— , জন্ম তারিখ- ————— ইং, ধর্ম-খ্রীষ্টান, জাতীয়তা- বাংলাদেশী, এই মর্মে প্রতিজ্ঞাপূর্বক ঘোষনাকরিতেছি যে,

১। আমি একজন প্রাপ্তবয়স্ক-যুবতী এবং বাংলাদেশের নাগরিক বটে। আমার বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ভাল-মন্দ বিচার করার জ্ঞান ও বুদ্ধি আমার আছে।

২। আমি দীর্ঘদিন যাবত ইসলাম ধর্মের আচার-আচরণ, সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি ইসলাম ধর্মের শান্তির বাণীর প্রতি আকৃষ্ট হইয়া আসিতেছি এবং ধীরে ধীরে ইসলাম ধর্মকে অতিশয় ভালবাসিয়া ইসলাম ধর্ম গ্রহনের সিদ্ধান্তগ্রহন করি।

৩। উক্ত মতে অদ্য ————— ইং তারিখ আমি আমার পূর্বতন খ্রীষ্টান ধর্ম পরিত্যাগ করিয়া স্থানীয় মৌলানা সাহেবের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের মূল স্তম্ভ পবিত্র কালেমা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)” নিজ জবানীতে পাঠ করতঃ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিয়াছি। সেই প্রেক্ষিতে অত্র হলফনামা সম্পাদন করিতেছি।

৪। যেহেতু আমি পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহন করিয়াছি, সেহেতু অদ্য হইতে আমার পূর্বের নাম “ ————— ” পরিবর্তন করিয়া বর্তমান নাম “ ————— ” উক্ত নামেই আমি সর্বত্র পরিচিতি লাভ করিব এবং সর্বক্ষেত্রে আমার উক্ত নামব্যবহার ও কার্যকর বলিয়া গন্য হইবে।

৫। আমি সম্পূর্ণ সুস্থ মস্তিষ্কে, সরল অন্তকরনে, স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায়, সম্পূর্ণ কাহারো বিনাবাধা ও প্ররোচনায় অত্র হলফনামা সম্পাদন করিয়া নিজ নাম দস্তখত
করিলাম।

এতদ্বার্থে, স্বেছায় ও স্বজ্ঞানে অত্র হলফনামা
পড়িয়া, ইহার মর্ম ও ভবিষ্যৎ ফলাফল সম্পর্কে
সম্যক অবগত হইয়া নোটারী পাবলিক এর
কার্যালয়, ঢাকাতে উপস্থিত হইয়া অত্র
হলফনামায় আমার নিজ নাম সহি সম্পাদন
করিলাম। ইতি, তাং———ইং।
_________________
হলফকারীনির স্বাক্ষর


হলফকারীনি আমার সম্মুখে সহি করিলে, আমি
তাহাকে সনাক্ত করিলাম।
_____________
এডভোকেট

ধর্ম পরিবর্তন হলফনামার নমুনা কপি

ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা
ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা প্রথম পেজ
ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামা ২য় পেজ

নাম পরিবর্তনের হলফনামা

প্রতিটি ধর্মের মানুষের মধ্যে ধর্ম অনুসারে নামের কিছু ধর্মগত পরিবর্তন রয়েছে। সুতরাং ধর্ম পরিবর্তনের সাথে নামের পরিবর্তনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। তবে নাম পরিবর্তনের হলফনামা খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়। ধর্ম পরিবর্তনের হলফনামার সাথে একই হলফনামায় নাম পরিবর্তনের ঘোষণা দেওয়া যায়। তাছাড়া অনেক সময় বিভিন্ন জটিলতার কারণে নাম পরিবর্তন করা হয় না।

ধর্ম পরিবর্তন করে বিয়ের হলফনামা

ধর্ম পরিবর্তন করে বিবাহ করতে চাইলে, বিবাহের হলফনামা (কোর্ট ম্যারেজ) করতে হবে। হলফনামার মাধ্যমে আইনজীবীর দ্বারা শনাক্ত করে এবং নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে সত্যায়িত করে বিবাহের ঘোষণা দিতে হবে। এই হলফনামার মাধ্যমে বিবাহ ঘোষণা দেওয়াকে কোর্ট ম্যারেজ বলে।

তবে মনে রাখতে হবে হলফনামা বিবাহের ঘোষণা মাত্র। বিবাহকে সর্বদা গ্রহণযোগ্য করতে অবশ্যই সরকার কর্তৃক নির্ধারিত রেজিস্ট্রার দ্বারা বিবাহ রেজিস্ট্রি করতে হবে। বিবাহের হলফনামা নমুনা দেখানো হল।

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
বরাবর, নোটারী পাবলিক এর কার্যালয়, ঢাকা, বাংলাদেশ। 
 “ বিবাহের হলফনামা (কোর্ট ম্যারিজ)”

সকল প্রশংসা পরম করুণাময় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের, যিনি মহিয়ান, গরিয়ান, অনন্ত অসীম, সমগ্র বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ও পালনকর্তা, তাঁহার নাম স্মরণ করিয়া এবং মুহাম্মাদ (সাঃ) এর নামে দরুদ ও সালাম পাঠ করিয়া বিবাহের হলফনামার বয়ান আরম্ভ করিলাম।

আমরা (১) আমি, ——————, পিতা- ————, মাতা- ————, ঠিকানা- ————-, ———-, পোঃ ———-, থানা- ——, ————–, জেলা- —-, জন্ম তারিখঃ————— ইং, ধর্ম – —-, পেশা- ———-, জাতীয়তা- —————– , জাতীয় পরিচয় পত্র নং- —————–।

এবং

(২) —————– , পিতা- —————– , —————– , সাং- —–, ——, ডাকঘর——–, থানা- ——, জেলা- ———, জন্ম তারিখঃ —————– ইং, পেশা- ——–, ধর্ম – ———–, জাতীয়তা – ————, জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ———-।

এই মর্মে উভয়ে হলফনামার মাধ্যমে ঘোষণা ও প্রকাশ করিতেছি যে-

১। আমরা উভয়ে জন্মসূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক ও বাসিন্দা এবং বাংলাদেশের আইনের শ্রদ্ধাশীল বটে।
২। আমরা উভয়ে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ও মুসলমান।
৩। আমরা উভয়ে প্রাপ্ত বয়স্কা ও প্রাপ্ত বয়স্ক। আমরা আমাদের ভাল মন্দ বুঝিতে সক্ষম বটে এবং দেশের প্রচলিত আইন কানুন সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছি। আমরা উভয়ে নিজেদের বিবাহে সম্মত্তি প্রদানে আ্ইনতঃ ও ন্যায়তঃ যোগ্য বটে।
৪। আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ একে অপরকে চিনি ও জানি এবং একেঅপরকে ভালবাসি। ভালবাসার কারণে হৃদয়ের গভীরতা হইতে একে অপরের প্রতি মমত্ববোধের কারণে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সেই মোতাবেক মাননীয় নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে হাজির হইয়া হলফ নামার মাধ্যমে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে চাই। 

৫। আমি —————– এই মর্মে হলফ পূর্বক ঘোষণা ও প্রকাশ করিতেছি যে, উক্ত —————– কে আমি দীর্ঘ দিন হইতে চিনি ও জানি। তাহার মেধা, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা, চালচলন, কথাবার্তা, ব্যবহার, তাহার ব্যক্তিত্ব এবং সর্বোপরি ধর্ম নিষ্ঠা আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে। সেই কারণে স্বেচ্ছায় স্ব-জ্ঞানে, সুস্থ্য শরীর ও মনে এবং অন্যের বিনা প্ররোচনায় আমি তাহার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য স্বেচ্ছায় সম্মতি প্রদান করিলাম।

৬। আমি —————– এই মর্মে হলফপূর্বক ঘোষণা ও প্রকাশ করিতেছি যে, উক্ত —————– -কে আমি দীর্ঘ দিন যাবৎ জানি ও চিনি। তাহার চাল-চলন, কথা – বার্তা, আচার, আচরণ, ব্যবহার এবং সর্বোপরি তাহার ধর্ম নিষ্ঠা, আমাকে মুগ্ধ করিয়াছে সেই কারণে আমি স্বেচ্ছায়, স্ব-জ্ঞানে, সুস্থ্য শরীর ও মনে এবং অন্যের বিনা প্ররোচনায় অত্র বিবাহে সম্মতি প্রদান করিলাম।

৭। আমরা উভয় আরো হলফপূর্বক ঘোষণা করিতেছি যে, আমাদের সাংসারিক জীবনে আমরা একে অপরকে সকল প্রকার শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন হইতে বিরত থাকিব এবং উভয়ই কেহ কারো প্রতি অন্যায় আচরণ করিব না।
৮। আমরা উপস্থিত সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে উভয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করিয়া আমাদের বিবাহের দেন-মোহর ———————-/- (——- ) টাকা ধার্য্য করিয়া এবং উহা ওসুল দেখাইয়া ইসলামী শরা শরীয়ত মোতাবেক পবিত্র কালেমা পড়িয়া বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইলাম।
৯। উল্লেখ্য, আমরা ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক কাজী দ্বারা অত্র বিবাহ রেজিষ্টি করিয়া নিব।

উপরোক্ত বিবরণ সত্য, সঠিক ও নির্ভুল
বিধায় আমারা তাহা পড়িয়া ও পড়াইয়া শুনিয়া
অন্যের বিনা প্ররোচনায় স্বেচ্ছায়-স্বজ্ঞানে সাক্ষীগণের
উপস্থিতিতে অদ্য —————– ইং তারিখে
অত্র হলফনামায় নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করিলাম।

____________________
____________________
হলফকারীদ্বয়ের স্বাক্ষর

হলফকারীদ্বয় আমার সম্মুখে তাহাদের
নিজ নিজ নাম স্বাক্ষর করিলে আমি তাহাদের
সনাক্ত করিলাম এবং হলফকারীদ্বয় কর্তৃক
মিথ্যা তথ্যের জন্য সনাক্তকারী দায়ী নহে।

_______________
আইনজীবী

হলফনামা আইনজীবীর মাধ্যমে শনাক্ত এবং নোটারি পাবলিক বা প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সত্যায়ন করতে হয়। নিন্মে সত্যায়িত বিবাহের হলফনামা/ কোর্ট ম্যারেজের নমুনা কপি দেওয়া হল…

কোর্ট ম্যারেজের নমুনা কপি

কোর্ট ম্যারেজ এর নমুনা কপি ১
কোর্ট ম্যারেজ এর নমুনা কপি ১

বিবাহের হলফনামা

কোর্ট ম্যারেজ ফরম
কোর্ট ম্যারেজ ফরম ২য় পেজ(2)

কোর্ট ম্যারেজ এর নমুনা কপি ২

যোগাযোগঃ messenger

Phone: 01924-11 91 84, বা 01515-615786

Email: admin@marriagedivorcelawyerdhakabd.com বা focuse.unique60@gmail.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *